কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে মাঠে নামে ইংল্যান্ড ফুটবল দল। ইরানের বিপক্ষে ম্যাচশেষে ফেভারিটের সেই তকমাটা বেশ ভালোভাবে প্রমাণ করেছে গ্যারেথ সাউদগেটের দল।
কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ইরানের বিপক্ষে অর্ধ ডজন গোল করলো ইংল্যান্ড। ইরানকে হারাতে হয়েছে ৬-২ গোলের বিশাল ব্যবধানে। ইংল্যান্ডের পক্ষে আজ পাঁচজন ফুটবলার গোলের দেখা পেলেন। তারা হলেন জুড বেলিংহ্যাম, বুকাইয়ো সাকা, রহিম স্টার্লিং, মার্কাস রাশফোর্ড, জ্যাক গ্রিলিশ। এরমধ্যে আর্সেনালের ইংলিশ মিডফিল্ডার সাকা জোড়া গোলের দেখা পেয়েছেন।
গোটা ম্যাচে ইংল্যান্ড চরম পর্যায়ের আধিপত্য দেখিয়েছে। ৮০ শতাংশ বল দখলে রাখার পাশাপাশি ইরানের চেয়েও দ্বিগুণ আক্রমণ সংগঠিত করেছে থ্রি লায়নসরা।
ম্যাচের শুরু থেকে ইরানকে চাপে রাখে ইংলিশ ফুটবলাররা। শুরু থেকে আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে হ্যারি কেইন, স্টার্লিংরা।
ম্যাচে ইংল্যান্ড প্রথম সবচেয়ে কঠিন আক্রমণ করে ৮ম মিনিটে। তবে ডানপ্রান্ত থেকে হ্যারি কেইনের করা সেই ক্রস কেউ মাথা ছোঁয়াতে না পারায় গোল বঞ্চিত হয় ইংল্যান্ড।
তবে সেই আক্রমণের কারণে পিছিয়ে যায় ইরান। দলটির মূল গোলরক্ষক আলি রেজা আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়। এরপর আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় ইংলিশরা।
ম্যাচের ৩২তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই বসেছিল ইংল্যান্ড। তবে হ্যারি ম্যাগুয়েরোর হেড গোলবারে আঘাত পেয়ে ফিরে গেলে আক্ষেপে পুড়তে হয় ইংলিশ সমর্থকরা।
তবে প্রথম গোলের জন্য এরপর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে জালের দেখা পান বেলিংহ্যাম। বাম প্রান্ত থেকে লুক শ'র দারুণ এক ক্রস থেকে হেডে বল জালে জড়ান ১৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।
বেলিংহ্যাম দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ইংলিশ ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোলের দেখা পেলেন। তার আগে ১৯৯৮ সালে মাইকেল ওয়েন ১৮ বছর ১৪৫ দিন বয়সে গোল করেছিলেন। বেলিংহ্যাম যখন গোল পেলেন তখন তার বয়স ১৯ বছর ১৪০ দিন।
প্রথম গোল পাওয়ার পর আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে ইংল্যান্ডের আক্রমণভাগ। খেলার ৪৩ তম মিনিটে এবার গোল পান সাকা। ইরানের ডি বক্সে জালের খোঁজ করতে থাকা ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের মধ্যে বল পেয়ে যান সাকা। আর সেখান থেকে ডান পায়ের দারুণ ভলিতে বল জালে জড়াতে কোনো ভুল করেননি আর্সেনালের এই স্ট্রাইকার। সেই গোল পাওয়ার ৩ মিনিট পরে আবারও ইরানের জালে বল জড়ায় ইংল্যান্ড।
শুরুর দিকে ইরানের গোলরক্ষকের ইনজুরি সমস্যার কারণে লম্বা সময় নষ্ট হয়। ফলে প্রথমার্ধে ১৪ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেয়া হয়। এর ১ম মিনিটে জালের দেখা পান চেলসির জার্সিতে দারুণ ফর্মে থাকা স্টার্লিং।
এই গোলের জন্য অবশ্য ইরানের ভুলকেই দায়ী করা যায়। দলটির ডিফেন্ডাররা বল হারিয়ে ফেললে সেখান থেকে বল পেয়ে যান বেলিংহ্যাম। তিনি সামনে ডানে কেইনের উদ্দেশ্যে বলটি বাড়িয়ে দেন। কেইনের ক্রস থেকে জোরালো শটে বল জালে জড়ান স্টার্লিং।
বিরতির পর মাঠে নেমে আবারও গোল উৎসব শুরু করে ইংল্যান্ড। খেলার ৬০ তম মিনিটে স্টার্লিংয়ের দারুণ অ্যাসিস্টে ব্যবধান ৪-০ করেন সাকা।
ইরানের জালে হালি পূর্ণ করার পর গোল হজম করতে হয় সাউদগেটের দলকেও। খেলার ৬৫ তম মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে গোল আদায় করে নেয় ইরানের স্ট্রাইকার মেহদি তারেমি।
গোল করার ঠিক ১ মিনিট আগে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ইরানের এই স্ট্রাইকার। গোল হজম করার পর ইংলিশরা আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠেন।
৭০ তম মিনিটে মাঠে নেমেই গোল করে ইংলিশদের এগিয়ে দেন মার্কাস রাশফোর্ড। অধিনায়ক কেইনের দ্বিতীয় অ্যাসিস্ট থেকে গোল করে বসেন ম্যানইউয়ের এই তরুণ ফরোয়ার্ড।
বদলি হিসেবে নামা জ্যাক গ্রিলিশও পান গোলের দেখা। ম্যাচের ৮৯ তম মিনিটে আরেক বদলি উইলসনের অ্যাসিস্ট থেকে গোল করেন ম্যানসিটি তারকা।
আপনার মতামত লিখুন :